[ বেদ যজ্ঞ করেই তোমাদেরকে দর্প শূন্য হয়ে ব্রহ্মসনাতন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের
চরণে আশ্রয় নিতে হবে।]
ব্রহ্মসনাতন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট অহংকার ব্রহ্মা- বিষ্ণু – মহেশ্বরেরও
শোভা পায় না। তাঁরাও তাঁর ভয়ে সদায় নিজ কর্তব্য কর্মে বিভোর হয়ে তাঁরই ধ্যানে
মগ্ন। তিনি সবার দর্পভঙ্গ করেন নিজের ঈশশক্তির দ্বারা। মানুষ এখানে সামান্য শক্তি
নিয়ে কিসের অহংকার করবে? তিনি জ্ঞানানন্দ হয়ে মানুষকে মহাজ্ঞান দান করেন কেবল তাঁর
মহিমা কীর্তনের জন্যে। তাঁর লোমকূপে যত দেবদেবতা শক্তিধর হয়ে রয়েছেন তাঁর কল্পনাও
মানুষের অসাধ্য। রাম অবতার হয়ে তিনিই আসেন, আবার তিনিই নিজের অন্তরের জ্ঞানকে
লুপ্ত করে আত্ম-বিস্মৃত হয়ে যান। এই যে অনন্তের অন্তরে এ আত্ম-অহংকার- এ লীলা তাঁর
কে বুঝবে? এই বিশ্ব ধারণে কেবল তাঁর শক্তিই কাজ করে চলেছে। তিনি নিজেকেই নিজে
প্রকাশ করে চলেছেন এবং নিজেই নিজের দর্প চূর্ণ করে সকলকে শিক্ষা দিয়ে চলেছেন যে
আমিই একমাত্র দর্প চূর্ণকারী হরি। ব্রহ্মসনাতন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যিনি সপ্ত স্বর্গ
ব্রহ্মলোক শোভা করে রয়েছেন, তিনি নিজের মায়ায় নিজে আবদ্ধ হয়ে ধরায় এসে সান্দীপনি
মুনির স্থানে গিয়ে তাঁকে গুরুপদে বরণ করে তাঁর নিকট শিক্ষাগ্রহণ করেন। এর পিছনেও
মানবজাতিকে শিক্ষা দেওয়ার জন্যেই তাঁর মায়া কাজ করে চলেছিল। যুগে যুগে তিনি
ধর্মসেতু বন্ধন করার জন্যে অবতীর্ণ হন নিজেকে নিজের মায়াতেই আবদ্ধ করে ত্রিলোকের
সকলকে অজ্ঞানের অন্ধকার থেকে মুক্ত করে পরিত্রান করার জন্যে। তাঁর মায়াজালে এই
সংসার- সাগর ভাসছে। এই মায়াজালকে ছিন্ন করে পালাবার কারও পথ নায়। তাই মানুষের
একমাত্র পথ দর্প শূন্য হয়ে অন্তরের ভক্তি নিয়ে ব্রহ্মসনাতন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে
আশ্রয় নিয়ে তাঁরই সনাতন ধর্মকে রক্ষা করা। হরি ওঁ তৎ সৎ।