[ বেদ যজ্ঞ করে হংসরূপী নৌকায় চেপে সদায় হংসরূপী আত্মা হয়ে থাকো।]
মৃগরূপী মারীচ রাক্ষস, কতরূপ ধরে মায়াজাল
বিস্তার করে রয়েছে তা কেউ দেখতে পায় না হংসরূপী আত্মা রূপে নিজেকে প্রকাশ না করা
পর্যন্ত। সপ্তলোকের সর্বত্র তার মায়াজালের প্রভাব কাজ করে চলেছে। এই মায়া- মোহ
জালকে ছিন্ন করে মোক্ষলাভ করা জীবের পক্ষে বড়ই কঠিন সাধনা। আমরা লক্ষ্য করলেই
দেখতে পাবো বেশীর ভাগ মানুষের হৃদয় সাংসারিক মোহজালে সমাহিত হয়ে রয়েছে। তাই
তাদেরকে চারদিক থেকে অজ্ঞানের অন্ধকার ঘিরে রয়েছে, সেজন্যে তারা সত্য- মিথ্যার
বিচার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে। এই অবস্থায় তারা কেবল জন্ম-
মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করছে ও এলোক সেলোকের বিভিন্ন যোনিতে জন্ম নিয়ে মুক্ত হবার কথা
স্মৃতিতে আনতেই পারছে না। সদগুরু কে এবং তাঁর আশ্রয়ে গিয়ে মৃগরূপী মারিচ রাক্ষসের
মায়াজাল ছিন্ন করে কিভাবে নিজেকে হংসরূপী আত্মা রূপে জেনে মুক্ত হবে, এই চিন্তা
করে তারা কেউ সদগুরুর খোঁজ পর্যন্ত করতে চায় না। এই মোহরূপ নদী এত ভয়ংকর যে
একমাত্র হংসরূপী সাঁতারু ছাড়া কেউ এই নদী পার হবার জন্যে জলে পর্যন্ত নামতে চায়
না। একমাত্র যারা সদগুরুর কৃপা লাভ করে সদোপদেশ ও উৎসাহ লাভ করেন তাঁরাই নির্ভয়ে
এই নদী হংসরূপ ধারণ করে পারাপার করেন। এই মোহরূপ নদীতে যে কুমীর আছে, সেই কুমীর
তাঁদেরকে স্পর্শ করতে পারে না। এই নদীতে জল ও দুধ, অমৃত ও বিষ একসাথে মিশে আছে।
হংসরূপী আত্মা মহানন্দে দুধ ও অমৃত পান করেন আর নির্ভয়ে বার বার এই নদী পারাপার
করতে থাকেন সবায়কে উৎসাহ দেওয়ার জন্যে। অদ্ভুত ব্যাপার এই নদীর উভয় তীরে হাজার
হাজার দর্শক এই হংসরূপী মহাত্মাদের দেখতে থাকে প্রণাম জানায় কিন্তু কেউ নদীতে ভয়ে
নামে না। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।