[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে নিজের শক্তিকে জাগ্রত করে গুরু কৃপা লাভ করে ধন্য
হও।]
গুরু কৃপা লাভ করতে হলে নিজের জ্ঞান-ভক্তি- শক্তি-
বিবেক- বুদ্ধির উপর নির্ভর করতেই হবে। গুরুর দেওয়া বেদ মন্ত্র বেদ যজ্ঞের দ্বারাই
শিষ্যকে প্রাণবন্ত করে তুলতে হয় সকলের মঙ্গলের জন্যে। গুরুর স্বপ্ন শিষ্যের প্রাণে
প্রতিষ্ঠিত হয় দীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে নব জীবন লাভ করে। যেমন মানব জীবন- মানুষ লাভ
করে পিতার স্বপ্ন সফল করে- সেই বংশের মর্যাদার আলোকে বিভিন্ন লোকে প্রতিষ্ঠা করার
জন্যে, তেমনি গুরুর স্বপ্ন শিষ্য সফল করে আত্মার সাথে পরমাত্মার এক মহান সেতু
বন্ধনের মাধ্যমে। সদ্গুরু এই ব্রহ্মাণ্ডে একজনই আছেন, তাঁর প্রতিনিধিত্ব করে
চলেছেন দেব- দেবতা- যোগী- মুনি- ঋষি সহ জগতের মহান গুরুজনেরা মানব জাতিকে উদ্ধার
করে তাঁর জ্ঞান-বিজ্ঞানের ঘরে পৌঁছে দেবার জন্যে, কিন্তু মানুষ মায়া- মোহের বশে
থেকে তা উপলব্ধি করতে পারছে না। তাঁদের পথ ধরে চলে নিজের শক্তিকে জাগ্রত করে
সদগুরুর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার জন্যেই মানুষের বার বার এই পৃথিবীর বুকে আগমন।
আমরা এই মহান সত্যকে না জানার জন্যে নিজ আত্মাকে মুক্ত করে পরমাত্মার সাথে যুক্ত
করার জন্যে সেতু বন্ধনের কাজে নিযুক্ত হই না। আর সেতু বন্ধন করতে না পারলে ভবসাগর
আমরা কিভাবে পার হবো? এখানে যারা এই সেতু বন্ধনের কৌশল আমাদের শিক্ষা দেন তাঁরাই
আমাদের গুরুর পদ অলংকৃত করেন। তাঁদের দেখানো পথ ধরেই চলে আমাদেরকে তাঁদের স্বপ্ন
সফল করতে হবে। কারণ কেউ এক জন্মে নিজের স্বপ্ন সফল করে এই বিশাল সেতু বন্ধনের কাজ
সম্পূর্ণ করে সকলের তা উমুক্ত করে যেতে পারেন না। তাই তো বেদের যুগে এই রহস্যের
কথা গুরু শিষ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো। উপযুক্ত শিষ্যের উপর দায়িত্বভার গুরু দিয়ে
সকলের মঙ্গলের জন্যে এই সেতু নির্মাণের কাজে নিয়োজিত করে যেতেন। এক গুরুকে ঘিরে
হাজার হাজার শিষ্য এই কর্মে লিপ্ত থাকতেন। এই গুরু শিষ্যের মানববন্ধন মানব সমাজকে
আলোকিত করে রাখতো বেদের জ্ঞানে। তাই সমাজের বুকে- দেশে এক সুন্দর সত্যের ঐক্যতান
সকলকে এক সুরে বেঁধে রাখতো এবং মানব সমাজের সর্বত্র শান্তি- সত্য- ঐক্য ও সাম্য
বিরাজ করতো। এই ভারতবর্ষ ছিল গুরু শিষ্যের মিলনক্ষেত্রের এক মহান দেশ। ওঁ শান্তিঃ
শান্তিঃ শান্তিঃ।