[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে আসুরিক প্রবৃত্তি থেকে মুক্ত
হয়ে দৈব্য শক্তিতে সদায় ভরপুর থাকো।]
অসুরেরা যতই
নিজেদের বাদাদুরি দেখাক তাদের শেষ পরিণতি ভয়াবহ। যতক্ষণ অন্ধকার থাকে ততক্ষণ
অসুরদের কৃত্রিম আলো জ্বলে ও সেই আলোতে ঝাঁপ দেবার জন্যে একশ্রেণির পতঙ্গ জীবনের
কোনকিছুই সত্য না জেনে জীবন উৎসর্গ করে নিজেদের অস্তিত্ব বিনাশ করে। অসুরদের ধর্ম
নিজেদের অস্তিত্বের বিনাশের জন্যে নিজেরাই সৃষ্টি করে জাগতিক নিয়মে এবং সেই নিয়মেই
তারা বিনাশ হয় কালের কবলে পড়ে। আর দেবতা ও মানুষের সম্পর্ক চিরন্তন। তাঁদের সনাতন
ধর্ম প্রকৃতি জাত। তাই তাঁদের ধর্মকে বিনাশ করার শক্তি অসুরদের থাকে না। যে বেদের
আলো ও তেজে সূর্য আলোকিত ও তেজোবান সেই বেদের আলোতে দেবতা ও মানুষ আলোকিত ও
তেজোবান। অসুররা সেই বেদকে কখনো স্বীকার করে না অহংকারে নিমজ্জিত হয়ে। কিন্তু
ঈশ্বর এই অসুরদেরও অন্তরে সেই বেদের আলো দিয়ে দৈব্যশক্তি দান করেছেন, তাদের মনোভাব
পরিবর্তন করার জন্যে। এই সত্য অসুর প্রবৃত্তির মানুষরা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারবে
না নিজেদের দুর্বলতা কাটিয়ে-- কারণ তারা পার্থিব জগতের সম্পদের মোহে ও তার
অহংকারের মধ্যেই আবদ্ধ থাকাতেই জীবনের মুল্য দেখতে পায়। তাই তারা সদায় যুদ্ধং দেহি
মনোভাব নিয়েই এই পৃথিবীর বুকে জন্ম নেই আর শুকিয়ে যায় প্রকৃতির নিয়মে।মানুষ আর
দেবতার মধ্যে সম্পর্ক চিরন্তন। দেবতারা তাঁদের অদৃশ্যশক্তি ও দেহ নিয়ে মানুষের
সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেন। মানুষও তাঁদের বিশ্বাস করে সদায় তাঁদেরকে নিজের
বন্ধু- আত্মীয় ভেবে নিজের সংসারে ধরে রাখেন। মানুষকে উৎসাহ- উদ্দ্যম- শক্তি- সম্পদ
দিয়ে দেবতারা সদায় তাঁদের বেদ যজ্ঞ করে চলেছেন ঈশ্বরের রাজত্বে। তাঁরাই ধীরে ধীরে
মানুষকে শুদ্ধ করে দেবতার আসন দিয়ে নিজেদের পরিবারে্র সদস্য করে নিচ্ছেন ঈশ্বরের
নির্দেশ মান্য করে। তাই সনাতন ধর্মে ঈশ্বর এক হলেও দেবতা ও মানুষের সংখ্যা অগণিত।
মানুষ দেহ ধারণ করে যত দেবতাদের অদৃশ্য শক্তি ও রূপের প্রতি আস্থা রেখে তাঁদেরকে
নিজেদের সংসারের সাথে যুক্ত করে রাখবে ততই তারা আসুরিক শক্তি থেকে মুক্ত হয়ে
দৈব্যশক্তিতে ভরপুর হয়ে থাকবে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।