[ হৃদয় মন্দিরে বেদ যজ্ঞ না করলে কেউ পবিত্র বেদজ্ঞান পেয়ে মুক্ত হতে পারেন
না।]
জ্ঞান ও অজ্ঞান বা অপরা বিদ্যা ও পরা বিদ্যা দুটিই
মানব হৃদয় মন্দিরে অবস্থান করে স্বভাবসিদ্ধভাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের অন্তরে
জ্ঞান আর অজ্ঞান নিয়ে যজ্ঞ অর্থাৎ চিন্তন- মননের ধ্যান শুরু না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত
সত্যজ্ঞানের বাতি হৃদয় মন্দিরে জ্বলে উঠে না। আমরা সবায় জানি পরব্রহ্ম পরমেশ্বর
আমাদের হৃদয় মন্দিরে তাঁর সার্বভৌম ক্ষমতা নিয়ে বাস করছেন। তাহলে আমরা এত দুর্বল
কেনো? এই দুর্বলতা দূর করার জন্যই আমাদেরকে আমাদের-ই হৃদয় মন্দিরের দেবতার উপর
নির্ভরশীল হতে হয়- তাঁরই শরণাপন্ন হতে হয়। তা না করে আমরা যখন বাইরের দেবতার উপর
নির্ভরশীল হই তখন আমরা বাইরের জগতের সাময়িক আনন্দ পেতে পারি তাঁর কাছ থেকে কিন্তু
স্থায়ীভাবে তিনি আমাদের মুক্ত করতে পারেন না। তাই আমাদেরকে বাইরের জগতের দেবতাকে
বিসর্জন দিয়ে অন্তর্জগতের দেবতার ধ্যান করতে হয় নীরবে নিশ্চিন্তে। আকাশ মণ্ডলকে
যেমন নিখিল বিশ্বের মানুষ একত্রিত হয়েও চামড়া দিয়ে ঢেকে ফেলতে পারবেন না তেমনি
বাইরের জগতের কামনা- বাসনা অপরা বিদ্যা দ্বারা এমনভাবে আচ্ছন্ন হয়ে আছে যে তাদের
শেষ কোথায় তা জানতেই শত সহস্র জন্ম চলে যায় তবুও মানুষের অন্তর্জগৎ নিয়ন্ত্রিত হয়
না ও সেই বেদমন্দিরে আলো জ্বলে না। আর বেদ- মন্দিরে আলো না জ্বললে সন্ধ্যা প্রদীপ
না জ্বললে কিভাবে একজন মানুষ সংসার বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারেন? ওঁ শান্তিঃ
শান্তিঃ শান্তিঃ।