[বেদ যজ্ঞ করে তোমাদের মধ্যেই যে মুলাধার,
স্বাধিষ্ঠান,মনিপুর,অনাহত,বিশুদ্ধ, আজ্ঞা ও সহস্রার সাত চক্র আছে তাদের দরজা একটার
পর একটা খুলে দাও।]
মুলাধার থেকে সহস্রারে যাত্রা শুরু করে
দিলেই ব্রহ্মাণ্ডের সব পৃথিবী, গ্রহ উপগ্রহ, সব আপন মনে ধীর স্থির হয়ে যাবে এই ব্রহ্ম
স্বরূপ দেহের অন্তর্জগতে এক মহাশক্তিশালী সুর নিয়ে। এই সুরই হচ্ছে জগত সৃষ্টির
মূল- তাহলো নাদ ধ্বনি ওঁ কার। মুলাধারের দরজা খুলে গেলেই সহস্রার চক্রে অবস্থান
করে শিবশক্তির সাথে যুক্ত হয়ে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির উদয় অন্তর জগতে শুরু হয়ে যাবে
দক্ষ যজ্ঞ। দক্ষযজ্ঞ করতে করতেই পৌঁছে যাবে মনিপুরে- সেখান থেকে একটা অদ্ভুত হাতির
শুঁড়ের মতো যা গণেশর মস্তক এর মতো দেখতে তা যুক্ত হয়ে যাবে মহাকাশের সাথে নৃত্য
করতে করতে। তারপরেই অনাহতের দরজা খুলে যাবে তখন দেখবে আর তাঁর দুই চক্ষু আর নেই।
সমস্ত চক্ষু তাঁর চক্ষু হয়ে গেছে—যেদিকে তাকান, সেদিকেই তিনি নিজেকে খুঁজে পান-
তিনি অদ্ভুত হয়ে গেছেন। এই রাজত্ব থেকে এগিয়ে গেলেই বিশুদ্ধের দরজা খুলে যাবে—তখন
দেখবে সব শেষ হয়ে গেছে, কিছুই নেই – অনুভুতি নেই, নির্বাণ নেই, মুক্তি নেই, কিছুই
নেই – তাদেখে তিনি একেবারে সাধারণ হয়ে গেলেন। তারপরেই যাত্রা শুরু আজ্ঞা চক্রে—এখানে
এসে তার ত্রিনয়ন খুলে গেল। দেখতে পেলেন তিনিই সব – তিনিই যুক্ত আছেন এই বিশাল
ব্রহ্মাণ্ডের সাথে আর জগতের সব বিষ পান করে জগতকে সবার জন্যে অমৃতময় করে ধরে
রাখছেন। তিনিই সেই শিব শক্তি। আজ্ঞা চক্র পার হয়েই সহস্রার অভিমুখে যাত্রা শুরু
করলেন। সহস্রার দরজা খুলে গেল—সেখানে প্রবেশ করে দেখছেন এ হলো এক জ্ঞান বিজ্ঞানের
শক্তির ঘর – এখান থেকেই সব সৃষ্টি হচ্ছে আর ছড়িয়ে পড়ছে ব্রহ্মাণ্ডের বুকে সৃষ্টিকে
নব নব রূপ দেওয়ার জন্যে—কেউ এখানে নেই আপন মনে সব হয়ে চলেছে কালের গতিতে—আর সবায়
যুক্ত এই ঘরের সাথে—এখান থেকেই নিয়নন্ত্রিত হয়ে চলেছে সবকিছু। এখানকার মালিক
খুঁজতে গিয়েই তখন দেখলেন আমি ছাড়া আর কেউ নেই – আমিই সেই ব্রহ্মশক্তি ব্রহ্মাণ্ড
জুড়ে রয়েছি। তখন চিৎকার করে বলার চেষ্টা করলেন এক ব্রহ্ম দ্বিতীয় নাস্তি। ওঁ
শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।