[ বেদ যজ্ঞ করে আগে মনকে সুস্থ রাখো তাহলেই পরমশান্তিতে সর্বত্র অবস্থান
করবে।]
দশ ইন্দ্রিয়ের রাজা হচ্ছে মন। এই মনকে সুস্থ
রাখায় মানুষের পক্ষে সবথেকে কঠিন কাজ। এত বিশাল মন যার আদি- মধ্য- অন্ত- তল কিছুই
খুঁজে পাওয়া যায় না তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা বড়ই কঠিন কাজ। এই মন বিশ্বব্রহ্মাণ্ড
জুড়ে রয়েছে এবং এর গতি আলোর থেকেও দ্রুতগামী। বৈদিক যুগে মুনি- ঋষিরা দেহের
প্রতিটি অঙ্গ- প্রত্যঙ্গকে যোগের দ্বারা এমনভাবে ব্রহ্মের সাথে সংযুক্ত করতেন যে
প্রতি অঙ্গে তাঁদের ফুটে উঠতো এক জ্যোতির্ময় প্রভা। তাঁরা পঞ্চ জ্ঞানেন্দ্রিয়ের
সাথে মানুষের মনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। ফলে মানুষের মন সংকীর্ণ অবস্থায়
সীমাবদ্ধ থাকতে পারতো না। সংকীর্ণ মন অপরাধ কাজ কর্মে লিপ্ত হয়। তাই তারা সুস্থ
সমাজ ও পরিবেশ গঠন করার জন্য মনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে, তার উপযুক্ত শিক্ষার
ব্যবস্থা করতেন। আত্মার জ্যোতিঃ হচ্ছে মন- আত্মা নিজে নিশ্চল থেকে মনকে গতি দিয়ে
সদায় কর্মে রত। এই সত্য জেনে আত্মজ্ঞানে ভরপুর করে তুলতেন মানব সন্তানদের—ফলে
অপরাধ করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে দেখা যেত না। অপুষ্টি রোগে কেউ ভুগতো না। সকলেই
ছিলেন মুনি- ঋষিদের তেজের ন্যায় বলবান। আজ মানুষ আত্মার জ্যোতিঃ মনকে খাদ্য না
দিয়ে দেহকে পরিপুষ্ট করার জন্যে সবায় অসুস্থ হয়ে রয়েছে এই মানব সমাজে – তাই তারা
হাতের কাছে স্বর্গ রাজ্য পেয়েও নরকে বাস করতে বাধ্য হচ্ছে নিজেদের ভুল সিদ্ধান্তের
জন্যে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।