বেদ যজ্ঞ
সম্মেলনঃ—২৪/ ০৯/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[ বেদ যজ্ঞ করে মোহরূপ রাত্রিতে
জেগে থাকো এবং শ্রীরামের পাদ- পদ বন্দনা
কর।]
মোহরূপ রাত্রিতে সকলেই নিদ্রায় মগ্ন থেকে স্বপ্ন
দেখে চলেছে। কেবল মোহরূপ রাত্রিতে যোগীগণ জেগে থাকেন এবং পরমার্থচিন্তায়
নিত্যযুক্ত থেকে এই মায়াময় জগতে উদাসীন থাকেন। শ্রীরামচন্দ্র ও সীতাদেবীকে ভূমিতে
শয়ন করতে দেখে নিষাদরাজ গুহক চণ্ডালের অন্তর দুঃখে ভরে গেলো। লক্ষণ তাঁর অন্তরের
কথা জানতে পেরে বললেন—হে ভাই। কেউ কি কাউকে সুখ অথবা দুঃখ দিতে পারে? সকলকেই তো
নিজ নিজ কর্মফল ভোগ করার
জন্য দেহ
ধারণ করতে হয়। সংযোগ- বিয়োগ, উত্তম- অধম ভোগ, শত্রু, মিত্র উদাসীন – এ সবই
ভ্রমাত্মক। জন্ম- মৃত্যু, সম্পত্তি- বিপত্তি, কর্ম ও সময় যতদূর পর্যন্ত রয়েছে,
ততদুর পর্যন্ত জাগতিক প্রপঞ্চ তাদের পিছু ধাওয়া করছে। ভুমি, গৃহ, ধনসম্পদ, নগর,
পরিবার, স্বর্গ- নরক, যা কিছু আচার- ব্যবহার এবং যা কিছুর দর্শন, শ্রবণ, চিন্তন
করা হয় তার মূলে থাকে অজ্ঞান স্বরূপ মোহ। তুমি পরম ভাগ্যবান তুমি এসব থেকে মুক্ত থেকে
শ্রীরাম অর্থাৎ পরমার্থ চিন্তায় স্থির হয়ে রয়েছো। পরমার্থ চিন্তায় এই সকলের
অস্তিত্ব নেই। বিবেক জেগে উঠলে মোহরূপ ভ্রান্তি পলায়ন করে তখন শ্রীরঘুনাথের চরণে
প্রীতি জন্মে। শ্রীরামচন্দ্রই পরব্রহ্ম। তিনিই পরমার্থ। আজ তুমি মোহনিদ্রা থেকে
মুক্ত হয়ে তাঁকেই ভূমিতে শয়ন করতে দেখছো। তুমি বড়ই ভাগ্যবান যে মোহরূপ রাত্রিকে জেনে –
সেই রাত্রিতে সদায় জাগ্রত থেকে পরমার্থ চিন্তায় ডুবে আছো। তাই তোমার ন্যায় বেদজ্ঞ
ঋষি আর কে আছে? ওঁ রাম শ্রীরাম জয় জয় রাম। রঘুপতি রাঘব রাজা
রাম।