বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—৩১/ ০৫/ ২০১৬
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ--[ বেদ যজ্ঞ করবে কিন্তু তোমাকে ঈশ্বরের পূজা করতে
হবে না তাঁকে ডাকতেও হবে না কেবল তাকে ভালোবাসো ও তার প্রশংসা করো তাহলেই তাঁকে দেখতে
পাবে সদায় তোমার সাথে।]
বেদ যজ্ঞ শুরু কর
তাহলেই দেখতে পাবে -- তোমার পূজা ঈশ্বর করে চলেছেন ষোড়শ উপাচারে এবং তাঁর প্রসাদে তুমি তোমার জীবন ধারণ করে আছো এই
পৃথিবীর বুকে। এই সত্যকে জেনে ও দেখে কেবল তাঁর সৃষ্টিকে
ভালবাসো ও বিভিন্ন পথে কেবল তাঁর প্রশংসা করে যাও—এটাই তোমার জীবনে বেদ যজ্ঞ। এটাই তোমার জীবনের কর্তব্য কর্ম ও জীবন দর্শন যার মাধ্যমে
সদায় সত্যমুখী হয়ে তাঁর উদ্দ্যেশে পুজা- নামাজ- প্রার্থনা –সন্ধ্যা- আরতি- আজান-
কীর্তন স্বাভাবিক নিয়মে চলতে থাকবে। এই পথেই তুমি প্রতিনিয়ত জ্ঞানসাগরে স্নান করে
পবিত্র ও জ্ঞানী হতে থাকবে অথচ তোমাকে কোন পার্থিব জগতের অহংকার স্পর্শ করতে পারবে
না। এই পথেই উপলব্ধি করতে পারবে তোমার ঈশ্বর যদি
তোমার পূজা করা ও যজ্ঞ করা বন্ধ করে দেন তবে তোমার জীবনের আর কোন মুল্য থাকবেনা।
তিনি ব্রহ্মাণ্ডব্যাপী যে যজ্ঞ করে চলেছেন তা অবলোকন কর—আর দেখো তিনি কত বড়
বৈজ্ঞানিক- দার্শনিক – কবি- সাহিত্যিক- প্রেমিক- পুরোহিত- মহাজ্ঞানী- পরিচালক ও
সংগঠক হয়ে ব্রহ্মাণ্ডের বুকে কর্ম যজ্ঞ –বেদ যজ্ঞ ও পুজা করে চলেছেন। তিনি সমস্ত জীব ও জড়ের হৃদয়ে
অবস্থান করে তাঁর যজ্ঞ করে চলেছেন সকলের অভিভাবক হয়ে – এই সত্য যখন জেনে নিবে তখন আর কি তোমাদের তাঁর জন্যে যজ্ঞ- পুজা-
নামাজ- প্রার্থনা করতে গিয়ে অসহিষ্ণু হওয়া শোভা পায়? তিনি সর্বভূতে বিরাজমান থেকে সব
দর্শন করছেন নিজেকে বিস্তার করে তাইতো তিনি বিষ্ণু – তিনি সর্বভূতের অন্তরে থেকে
যজ্ঞের দ্বারা সবার অন্তর কর্ষণ করছেন প্রেম ও মায়ার অঙ্গনে তাই তো তিনি কৃষ্ণ।
তিনি ব্রহ্মাণ্ডব্যাপী অবস্থান করছেন তাই তো তিনি ব্রহ্মা। তিনি সবার স্বামী-
ঈশ্বর- অভিভাবক তাই তিনি মহেশ্বর শিব সবার অন্তরে। তাঁকে ছেড়ে জীব আর অন্য কাউকে
ভালবাসতে পারেনা। তিনি সর্বভূতে বিরাজমান জেনে যারা সর্বভূতকে নিজ অন্তরে দর্শন
করেন তাঁরাই জীবনের সত্যকে জানতে পারেন। তাঁরা তখন আর মা- বাবা- গুরুজন- অতিথি-
জন্মভূমি ছাড়া কোথাও ঈশ্বরকে খুঁজেতে গিয়ে সময় নষ্ট করেন না।স্রষ্টার সৃষ্টিকে
ভালবাসার মধ্যেই তাঁরা প্রতিনিয়ত ঈশ্বরকে দর্শন করেন—কোন রকম লোক দেখানো মঠ মন্দির
গির্জা মসজিদে না গিয়ে। এই প্রেমই হচ্ছে মানুষের ধর্ম বাকী সব লোক দেখানো ও লোক
ক্ষাপানোর এক শয়তানী বুদ্ধির কৌশল মাত্র। তবে লৌকিক জীবনের ক্ষেত্রে এগুলির
গুরুত্ব আছে- তাই এগুলি ঈশ্বর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করে তাঁর প্রেমের
স্মৃতি স্বরূপ নিদর্শন সৃষ্টি করে রেখেছেন- যাতে মানুষ সহজ পথে সত্যকে জেনে এগিয়ে যেতে পারেন
এবং সেই অবলম্বনগুলিকে ধারণ করে সত্যকে দর্শন করে ঈশ্বরের প্রিয় হয়ে উঠতে পারেন। জয় বেদ ভগবানের
জয়।