[ বেদ যজ্ঞ করে নিজের সনাতন রূপে স্থির থেকে নিজের কর্তব্য কর্ম করে যাও
নিজের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্যে।]
ভাগ্যকে অস্বীকার করার উপায় নাই, কারণ ঈশ্বর
সবার ভাগ্যলিপি গলায় রক্ষা কবচ রূপে বেঁধে দিয়েই তাঁকে এই পৃথিবীর বুকে পাঠান। তাই
সকলেই নিজ নিজ ভাগ্যগুণে কর্ম করার অধিকার লাভ করেছে, তাই কেউ কারো ভাগ্য দেখে
হিংসা করলেই সে নিজের ক্ষতি নিজেই করবে। বিধাতার বিধান কে পরিবর্তন করবে? কর্ম –
ধর্ম আর ভাগ্য একই বস্তু কিন্তু নাম ভিন্ন ভিন্ন। সহস্র নামে ডাকলেও তারা অভিন্ন
হয়েই থাকে। কর্ম না করলে কারোও ধর্ম রক্ষা হয় না, আর ধর্ম রক্ষা না করতে পারলে কেউ
নিজের ভাগ্য গড়ে তুলে জীবনের রহস্য জানতে পারে না। আকাশ- পাতাল ভেঙ্গে এক হয়ে
গেলেও কেউ নিজের কর্ম ফলের ভোগান্তি থেকে মুক্ত হতে পারে না। এমনকি ব্রহ্মাণ্ড
ফুঁড়ে যদি কেউ ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করে তবুও
তাঁর কর্মফলের ভোগান্তি শেষ হয় না। এক শরীর ত্যাগ করে নূতন শরীর ধারণ করে চলতে
থাকে এই কর্ম ফলের ভোগান্তি। তোমরা ভাছছো ব্রহ্মজ্ঞানী হলেই মানুষ বা আত্মা কর্ম ও
কর্মের চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল কারণ যিনি ব্রহ্ম বা
ঈশ্বর তিনিও সদায় নিজ কর্তব্য কর্মে বিভোর, তিনিও এই কর্ম থেকে মুক্ত নন। তবে তিনি
সদায় নিজ সনাতন রূপে স্থির থেকে নিজের কর্তব্য কর্ম করে চলেছেন মুক্ত হয়ে। আর তিনি
তাঁর সৃষ্টিকেও নিজের সনাতন রূপে স্থির থেকে কর্মের মাধ্যমে ধর্মকে রক্ষা করার
জন্যেই সবার গলায় ভাগ্যলিপি ঝুলিয়ে দিয়েছেন। যারা এই ভাগ্যলিপি পাঠ করে নিজের
সনাতন রূপে স্থির থেকে বেদ যজ্ঞ করে চলেন তাঁদের ভাগ্য সদায় তাঁদের সাথেই থাকে এবং
তাঁকে যখন যেরূপে গড়ে তোলা প্রয়োজন এই ব্রহ্মাণ্ডব্যাপী কর্মক্ষেত্রে তেমন ভাবেই
গড়ে তোলেন। এক শরীর বা দেহে থেকেই পুনঃ নব দেহ গড়ে তোলার জন্যেই যত ধর্ম –কর্ম ও
সংগ্রাম চলছে জীবাত্মার। তাই যারা পরকাল বা পরবর্তী জীবন গড়ে তোলার জন্যে কেবল
চেষ্টা ও সংগ্রাম চালায় তারাই এই মহাসত্য জানতে পারে এবং নিজের সনাতন আত্মায় স্থির
থেকে পরবর্তী জীবনের জন্যে যেমন খুশী ভাগ্য তৈরী করে নিতে সক্ষম হয়। তাই পুনঃ
জন্মকে অস্বীকার করার এই ব্রহ্মাণ্ডে কারো পথ নেই। আমাদের যত কর্ম –ধর্ম ভাগ্য
সবকিছুই চলছে পুনঃজন্ম বা পরকালের জীবনকে পাবার আশায়। হরি ওঁ তৎ সৎ।