বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৩/ ০৮/ ২০১৬ স্থানঃ—ঘোড়শালা*
মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচনার বিষয়ঃ---[ বেদ যজ্ঞ করে আত্মার সাথে পরমাত্মার সেতু
বন্ধন করতে পারলেই জীবনের সব কাজ সহজ হয়ে যায়।]
বীর হনুমানজি বড় রাম ভক্ত ছিলেন। তাই প্রভু
রামের কৃপায় তিনি অনায়াসে সাগর পার হয়ে লঙ্কায় চলে গেলেন মা সীতার সন্ধানে। কিন্তু
প্রভু রামচন্দ্র স্বয়ং ভগবান হয়েও সেই সাগর পার হতে পারলেন না, তাঁকে রাবণের সাথে
যুদ্ধ করে সীতা মাতাকে উদ্ধার করার জন্য সাগরে সেতু বন্ধন করতেই হলো। এই সেতু
বন্ধনের পিছনে রাজা রামের বিশাল অবদান ছিল। তিনি কেবল সীতাকে উদ্ধারের জন্য এই
সেতু নির্মাণ করেন নি। এই সেতু নির্মাণের ফলে অতি ক্ষুদ্রকার পিপীলিকাও যাতে
অনায়াসে এই ভবসাগর পার হতে পারেন তিনি কৃপা করে এই ব্যবস্থায় করেন। তিনি ভগবান
হয়েও অতি সাধারণ মানুষের ন্যায় সহজ- সরল ভাব নিয়ে লীলা করে গেলেন। এর পিছনে বিশাল
রহস্য রয়েছে। যেমন কাব্যে যদি সহজ সরল ভাবে নির্মল যশঃ কীর্তন করা হয় আর শত্রুদেরও
শত্রুতা ত্যাগ করে প্রশংসা করাতে সক্ষম হয় তবেই তা সুধীজনের সমাদর লাভ করে থাকে।
ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জীবন ছিল কাব্যের ন্যায় সহজ – সরল- সুন্দর সরস মাটির ন্যায়
উৎপাদনশীল। তাই তিনি এই সেতু নির্মাণ করে কেবল যে লঙ্কাপতি রাবণের প্রশংসা লাভ
করেছিলেন তা নয়, ভাই বিভীষণকে বন্ধু ও ভক্ত রূপে লাভ করে লংকাবাসীর মন জয় করে
নিয়েছিলেন। জীবের শক্তি নেই পরমাত্মার সাথে সেতু বন্ধন করে তাঁর কাছে যাবার।
কিন্তু জীবের প্রতি তাঁর কৃপা হলেই তিনি এই সেতু বন্ধন করে দেন এই পার্থিব জগতে
খেলার ছলে এসে। তাঁর এই লীলা খেলা মূর্খজনকে মোহিত ও জ্ঞানীজনকে সুখী করে।
জ্ঞানীজন জয় শ্রীরাম বলে নদ- নদী- পাহাড়- পর্বত- সাগর- স্বর্গ- নরক- জীব- জড়-
মানুষ- দেবতা- অসুর- রাক্ষস সকলের সাথে এক
নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলেন আত্মিক সেতু বন্ধনের মাধ্যমে। মূর্খজন সেই সেতুর উপর দিয়ে
ভবসাগর পার হতে গিয়েও ঠাট্টা- তামাসা মধ্যেই নিজেদের মূল্যবান জীবন নষ্ট করে দেয়
বেদ যজ্ঞ রহস্য না জানার জন্য। জয় শ্রীরাম।