বেদ যজ্ঞ সম্মেলনঃ—২৮/ ০৬/ ২০১৬
স্থানঃ—ঘোড়শালা* মুর্শিদাবাদ* পঃ বঃ
আজকের আলোচ্য বিষয়ঃ—[
বেদ যজ্ঞ করে বেদের পবিত্র মন্ত্র ওঁ
কারকে আশ্রয় করেই আমরা মহাসত্যকে জানতে পারি এবং এই মহাসত্যের উপর ভর করে
বিশ্ববাসীকে এক সুত্রে বাঁধতে পারি।]
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন আমি প্রণব ধ্বনি বা শব্দের মধ্যে ওঙ্কার। এই
ওঁকার শব্দ কি? তিনি গীতায় বলেছেন—“ অব্যক্তাদিনী ভুতানি ব্যক্ত মধ্যানি ভারত”।
আমরা যাকে আকাশ- গঙ্গা বলি, তার মধ্যে সূর্য অপেক্ষা লক্ষ লক্ষ গুণে বড় কোটি কোটি
সূর্য বিরাজ করছে। সেখানে আমাদের সূর্য একটি অতি ক্ষুদ্র তারকা। এই আকাশ- গঙ্গার
ঊর্ধ্বে যে মহাকাশ তা অব্যক্ত। এই অব্যক্ত মহাকাশের আমরা কিছুই জানি না। তবে
ঋষিশ্রেষ্ঠগণ একটি কথা নিশ্চিতরূপেই জানিয়েছেন যে –সেই মহাকাশের একটি গুণ—সেই
গুণটির নাম শব্দ। এই শব্দই প্রণব বা ওঙ্কার। যা কিছু ব্যক্ত বা প্রকাশিত হয়েছে, হচ্ছে
ও অনন্তকাল ধরে হবে তা সবই ওঙ্কার হতে। এই মহাকাশের শব্দ মন্ত্র ওঁ সবার পবিত্র
বীজ মন্ত্র। তাই আমাদের সকলের পক্ষে সমান ও এক মন্ত্র বলা যায় প্রণব অর্থাৎ ওঁ। এই
বীজ, ঈশ্বরস্বরূপ। মানবজাতি- দেব- দেবতা সহ সকল সৃষ্টির বীজ হলো ওঁ। এই ওঁ কেবল
হিন্দুদের ঈশ্বর নহেন—সমগ্র মানবজাতির তিনিই একমাত্র ঈশ্বর। এই ওঁ ধ্বনির সুরেই
মানবজাতির মহামিলন হবে বেদযজ্ঞের মাধ্যমে—কারণ এই ওঁ ধ্বনিই একমাত্র পরব্রহ্মরূপে
প্রাণবন্ত হয়ে সর্বভূতে বীজরূপে মহাপ্রলয়ের পরেও অবস্থান করেন। তাই প্রলয়কালেও কেউ
ধ্বংস হয় না – আবার নবরূপে জেগে উঠে। তাই আমরা সকলেই ওঁ বীজেই ছিলাম- আছি – থাকবো,
এটাই চিরন্তন সত্য। হরি ওঁ তৎ সৎ।
