যারা নিজের জীবন বেদ রচনা করতে জানে না তারাই পরনিন্দা—পরচর্চা করে নিন্দাপ্রিয় লোক হয়ে উঠে এই ধরাধামে। তারা সর্বদা সত্যকে বিকৃত করে নানা রকম রঙ লাগিয়ে দুই দলের সৃষ্টি করে। সারা
জীবন ধরে তারা কেবল পরনিন্দা—পরচর্চা করেই সময় অতিবাহিত করে ও ঘরে –ঘরে, সমাজে—সমাজে,
গ্রামে—গ্রামে ও দেশে—দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে ও আগুন লাগায়। যে কোনো ঘরে –প্রতিষ্ঠানে
অশান্তির মূলে এই নিন্দাপ্রিয় লোকেরা। তাদের জ্ঞান অতি সামান্য কিন্তূ শয়তানি
বুদ্ধি প্রখর। কাকে কোন কথা বললে সঙ্গে সঙ্গে গিলে খাবে এই জ্ঞান এদের প্রখর। কখন
কোন কথায় কোন ঘরে ও নগরে আগুন লাগবে ও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে এই তালে তারা তাল
মেলাতে ওস্তাদ। নিন্দাপ্রিয় লোকেরা মানুষের কী ক্ষতি করে তারা নিজেরাই জানে না—সেই
সঙ্গে তারা নিজেদের কত ক্ষতি করে সে ব্যাপারেও সচেতন নয়। তাই যারা এ সব অবিশ্বাসী
লোকদের সান্নিধ্য থেকে মুক্ত থাকে, তারাই বুদ্ধিমান। তোমরাও কখনো কারো নিন্দা করবে
না—সর্বদা মানুষের প্রশংসা করবে তার গুণের দিক বিচার করে নিয়ে। প্রত্যেক মানুষের যেমন দোষ আছে তেমনি গুণ আছে। যে গুণগুলি আছে তা ঈশ্বর
প্রদত্ত আর যে দোষগুলি আছে তা তার স্বভাবজাত। তোমরা কেবল মানুষের গুণগুলি নিয়ে
আলোচনা করবে এবং তার প্রশংসা করে উৎসাহ দেবে। এর ফলে মানুষের স্বভাবজাত দোষগুলি
সংশোধিত হয়ে গুণগুলির আরো বিকাশ ঘটবে। তোমরা বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে এমন কোনো
কারো বিরুদ্ধে কথা বলবে না যে তোমাদের দল বা সংঘ ভেঙ্গে যায়। যে কথা তুচ্ছ বা
মূল্যহীন তা বলে কেন শক্তি ক্ষয় করবে? সর্বদা সত্যকে সুন্দর রূপে প্রকাশ করবে।
সত্যকে প্রকাশ করার কৌশল হচ্ছে শিক্ষা। এই কৌশল না জানলে তোমরা নিজেকে শিক্ষিত বলে
পরিচয় দিতে পারবে না। তোমরা শিক্ষিত ছেলেমেয়ে হয়ে উস্কানি মূলক কথা বলে বা একদল
অপর দলের নিন্দা করে নিজেদের ক্ষতি নিজেরাই করছো—তা কি উপলব্ধি করতে পারছো না। বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে তোমরা নিজেকে ভারত রূপে প্রকাশিত করতে থাকো তাহলেই
দেখবে আর তোমরা কোনরূপ নিন্দা –প্রশংসার জালে আবদ্ধ হয়ে থাকছো না ও তোমাদের দ্বারা
কারো কোন ক্ষতিসাধন হচ্ছে না। মুক্ত পুরুষ হয়ে বিচরণ করার মতো আনন্দ আর কিছুতেই
নাই—আর এই মুক্ত পুরুষ মানুষকে হতে হয় নিন্দা- প্রশংসার ঊর্ধ্বে উঠে ভারত নাম নিয়ে
বেদ যজ্ঞের মাধ্যমে বিশ্বমানব শিক্ষার কর্মী হয়ে। জয় ভারত মাতার জয়।