[ বেদ যজ্ঞ করে নিজের দেবত্ব শক্তিকে জাগ্রত করে মানব জীবন ধন্য করো।]
আগে ঈশ্বরের আশ্রয়ে এসে মনকে পবিত্র করতে হবে ও
জানতে হবে মানব জীবনের সত্যকে। এই মানব জীবন তিনটি সুত্র দিয়ে ঈশ্বরের সত্য ঊপাদান
দিয়ে তৈরী। এই উপাদানগুলি থেকেই মানব অন্তরে ও মনে তিনটি স্রোত প্রবাহিত হতে থাকে
তিনটি শক্তি নিয়ে। এই শক্তি থেকে তিনটি প্রবৃত্তি সৃষ্টি হয় বিভিন্ন পরিবেশের
স্পর্শ পেয়ে। এই তিনটি প্রবৃত্তি হচ্ছে পশুত্ব, মনুষ্যত্ব ও দেবত্ব। এই তিনটি
প্রবৃত্তিকে জাগ্রত করার জন্যে সদায় মানুষের অন্তরে ইচ্ছাশক্তি, কর্মশক্তি ও
জ্ঞানশক্তি কাজ করে চলেছে। যখন মানুষ এই তিন শক্তিকে শুভদিকে পরিচালিত করার কৌশল
শিখে নিতে সক্ষম হয় তখন আর তাঁকে পিছন দিকে তাকাতে হয় না ধীরে ধীরে তিনি দেবত্ব
গুণের অধিকারী হয়ে উঠেন। এই অবস্থায় মানুষ যখন নিজের জ্ঞান- বুদ্ধিকে স্থির করে নিতে সক্ষম হয় তখন
মানুষ আর নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করতেই পারেন না। পরার্থে জীবন উৎসর্গ করার
জন্যেই তখন তাঁর জীবন তরঙ্গ সদায় প্রবাহিত হয় উচ্চমার্গে। এই দেবত্বভাব ও শক্তি
পরিশেষে ঈশ্বরের ভাব ও শক্তিতে এক হয়ে যায়। এই অবস্থায় মানুষ নিজেকে নিরাকার রেখে
ঈশ্বরকে সর্বভূতে সাকার রূপে দেখতে পান। নিজেকে সর্বভূতের মধ্যে ও সর্বভূতকে নিজের মধ্যে দেখতে পেয়ে সর্বদায় ঈশ্বরের
ধ্যানে –জ্ঞানে স্থির হয়ে যায় মানুষ দেবত্ব গুণ নিয়ে। এই
অবস্থায় তাঁর ঈশ্বরের গুণগান – স্তব- প্রশংসা করা ছাড়া আর কোন দায়িত্ব ও কর্তব্য
থাকেনা। অহংশুণ্য ও চাহিদাশূন্য এই দেবতাদের কেউ চিনতে পারেন না, কারণ এই মাত্রার
মানুষ এই পৃথিবীতে খুব কম। নর নিজের ইচ্ছাশক্তি, কর্মশক্তি ও জ্ঞানশক্তিকে শুভদিকে
চালিত করে নারায়ণ হতে পারেন এতে কোন ভুল নাই। কেবল নিজের চেষ্টায় মানুষকে ঈশ্বরের
দেওয়া দেবত্ব শক্তিকে জাগ্রত করার প্রয়াস যেকোন পরিবেশে চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই
তিনি মৃতদের মধ্যে থেকেই মানুষকে দেবতা রূপে জাগিয়ে তোলেন তাঁর রাজত্বে মানব জাতির
কল্যাণের জন্যে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।