[ বেদ যজ্ঞ করে জেনে নাও এক ওঁ কার থেকেই সবার সৃষ্টি, যারা এই তত্ব জেনে
ওঁ কার বিন্দুকে অন্তরে ধারণ করে রাখতেন তাঁরাই হিন্দু নামে পরিচিতি পেতেন।]
ওঁ কার বিন্দু থেকে সিন্ধু, এই সিন্ধু থেকে হিন্দু
হয়ে উঠার সাধনা সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে চলে আসছে। হিন্দু হচ্ছে মানবতার
ব্রহ্মগুণ। ব্রহ্মবিন্দু ওঁ কারের শক্তির উপাসনায় যারা স্থির থাকতেন তাঁরা বিন্দুর মধ্যেই
ব্রহ্মাণ্ডকে দেখতেন। বিন্দুর উপাসক হিন্দু হয়ে পৃথিবীর দায়িত্বভার পেতেন সরাসরি
ঈশ্বরের নিকট থেকে। ঈশ্বরের সাথে এই সেতু বন্ধনের সুত্র এই হিন্দু ছাড়া অন্য কেউ জানতেন না। এক প্রাণ থেকে সবার সৃষ্টি এবং সবায় এক ওঁ কার ব্রহ্মে অবস্থান
করছেন এই বিশ্বাস কালের কবলে পড়ে বিনষ্ট হতে থাকে। কিন্তু হিন্দু সুত্র ও তার
সনাতন ধর্ম অক্ষয় অমর হয়ে কালজয়ী অবস্থায় থেকে যায় এই পৃথিবীর বুকে। যারা পুরানো
এই সনাতন ধর্মের ধারাকে ধারণ করে চলেছেন তাঁরাই হিন্দু নামে পরিচিত হতে থাকেন এই
বিশ্ব মানব সমাজের বুকে। তাই এই হিন্দু নাম ব্রহ্ম সাগর বা সিন্ধুর ধারা থেকে
সৃষ্টি এক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আধ্যাত্মিক শক্তি ও মানবিক শক্তির নাম। তাই স্বামী
বিবেকানন্দ বলতেন—আমি নিজেকে হিন্দু বলতে গর্ববোধ করি। হিন্দু মানুষের এমন এক
গুণের নাম যার দ্বারা মানুষ দেহাতীত, ত্রিগুণাতীত ও ত্রিকালাতীত হয়ে এক
ব্রহ্মবিন্দু ওঁ কারে অবস্থান করতে পারেন ও সর্বভূতকে নিজের মধ্যে ও সর্বভূতের
মধ্যে নিজেকে দেখতে পান। তাই এক বিন্দুর উপাসক যারা তাঁরাই এই পৃথিবীর বুকে চিরকাল
হিন্দু নামে উজ্জ্বল হয়ে আছেন--- এঁরাই বিশ্বের বুকে আর্য বা ব্রহ্মজ্ঞানী নামে
পরিচিত হয়ে আছেন অন্তরে বেদকে ধারণ করে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।