[ বেদ যজ্ঞ করে
দীর্ঘ জীবন লাভের সহজ পথে এগিয়ে চলো।]
তোমাদের জীবন কবে শুরু হয়েছে ও কবে কোথায় শেষ হবে, তা জানার শক্তি কারো
নেই। একটা জীবন শেষ হবে, আর একটা নূতন জীবন পেয়ে যাবে। পুরানো জীবনের কথা কিছুতেই
স্মরণে আনতে পারবে না, আমি মনে করিয়ে না দিলে। আমার কাছে তোমাদের জীবনের ছবি সব
ক্যাসেট করা আছে। সেগুলি দেখলে তখন সব মনে পড়ে যাবে, আমার নিকট থেকে স্মৃতিশক্তি
লাভ করে তোমরা সবাই দীর্ঘ জীবন অতিবাহিত করেই এই পৃথিবীতে আছো। কিন্তু তোমাদের
দীর্ঘ জীবনের স্মৃতি খেয়ালে নেই। যদি থাকতো তবে কেউ বাঁচার জন্য সংগ্রাম করতো না।
সবায় সংগ্রাম করতো বেঁচে থেকে জীবনের সত্য জ্ঞান লাভ করার জন্যে। তোমরা ভাবছো আমি
নিরাকার, আমি কোন দেহে অবস্থান করি না। তোমাদের ভাবনা সব ভুল। তোমরাই নিরাকার
ছিলে, আমি তোমাদের আকার দান করেছি। এই চলার পথ হচ্ছে তোমার জীবন। পথ চলতে গিয়ে
ক্লান্ত হয়ে পড়লে তোমরা বিশ্রাম নাও। বিশ্রাম নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো। ঘুম থেকে উঠে
যে জীবন পাও, তাকেই তোমরা ভাবো নূতন জীবন, সেই জীবন পেয়ে আবার পথ চলা শুরু করো। এই
চলা কবে শুরু করেছো ও কবে শেষ হবে, তার হদিশ খুঁজে পাবে না। যেদিন আমি ডাক দিবো
সেদিন ছুটে আসতে বাধ্য হবে আমার কাছে। তারপর শুরু হবে আমার আদালতে সবার বিচার।
দীর্ঘ পথ পরিক্রমা করে কে কি লাভ করে এসেছে তা আমাকে দেখিয়ে পুরষ্কার না হয়
তিরস্কার নিয়ে আবার জীবন পথ শুরু করতে হবে। তাই দীর্ঘ জীবন লাভের জন্য তোমাদেরকে
ভাল মন্দ খাবার খেয়ে বেঁচে থাকার জন্যে সংগ্রাম না করে অজ্ঞানের খোলস ত্যাগ করে
জ্ঞানের পোশাক পড়ার জন্যে সংগ্রাম চালিয়ে যত তাড়াতাড়ি পারো আমার জ্ঞান- বিজ্ঞানের
ঘরে পৌঁছে যাও এই নির্দেশ দিয়ে আসছি সৃষ্টির প্রারম্ভকাল থেকে। তোমরা আমাকে দেওয়া
প্রতিশ্রুতির কথা বার বার ভুলে যাও—খোলস ত্যাগ করে। যখন আমার কাছে আসার সুযোগ পাও,
তখন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হও যে জ্ঞানের পোশাক পড়ে আমার দরবারে আসবে নিজের সৎ- সত্য-
সুন্দর ও জ্যোতির্ময় রূপ নিয়ে। তারপর জীবন পেয়ে আবার ভুলে যাও নিজের প্রতিশ্রুতির
কথা। নরককুণ্ডে আবর্জনার স্তূপে ডুব দিয়ে আলকাতরার পোশাক পড়ে আমার প্রদীপ্ত
জ্ঞানাগ্নির শিখার সামনে এসে দাঁড়িয়ে ছটপট করতে থাকো—ছুটে পালাবার পথ পাও না আমাকে
দেখে। ক্ষমা চেয়ে, আবার পথ চলা শুরু করো নূতন জীবন নিয়ে। তোমাদের জন্য পাঠানো হয়
কত আমার সত্য বার্তাবাহককে। কিন্তু তোমরা তাঁদেরকে চিনতে পারো না – নিজের অজ্ঞতার
কারণে। তাঁদেরকে তোমরা নিজেদের মতো মানুষ ভেবে, তাঁদের সাথে অন্যায় আচরণ করো,
তাঁদের বার্তাকে উপহাস করো। অবশেষে তোমরা নিজেরাই উপহাসের পাত্র হয়ে আবার আমার
আগুনের সামনে দাঁড়াও আলকাতরার পোশাক পড়ে ভুতের মতো চেহারা নিয়ে। তাই তোমাদের আবার
বলছি, আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলেছি, তোমরাও তোমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে
আমার দেওয়া জ্ঞানের পোশাক পড়ে আমার কাছে এসো আমার জ্ঞান বিজ্ঞানের ঘরে দীর্ঘ জীবন
লাভ করার জন্যে। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।