[ বেদ যজ্ঞের মাধ্যমেই মানুষ জানতে পারে মানব জীবনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় হলো শিক্ষা।]
মানব জীবনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষা।
শিক্ষায় মানব সভ্যতাকে ধারণ করে রাখে। এই শিক্ষা নিয়ে আমরা সকলেই চিন্তিত কেবল
মাত্র এই কারণে। জমিতে চাষ না করলে যেমন ফসল ফলে না, সেইরূপ মানব দেহে চাষ না করলে
জ্ঞানের উদ্ভব হয় না। এই চাষ করার পদ্ধতিটাই হচ্ছে শিক্ষা। এই মানব দেহকে কিভাবে
চাষ করলে ‘জ্ঞানস্বরূপ’ ফসল ফলবে এবং সেই জ্ঞানের দ্বারা দেশ- জাতি-সমাজ গড়ে উঠবে
সেই চিন্তা সকলের মনে অহরহ পাক খাচ্ছে। তাই এই চিন্তার দ্বারাই সৃষ্টি হচ্ছে
নিত্যনুতন শিক্ষা পদ্ধতি। কিন্তু যত নিত্য নূতন শিক্ষা পদ্ধতির সৃষ্টি হচ্ছে, তত
মানুষ অজ্ঞানের অন্ধকারে নিজেকে হারিয়ে ফেলছে। তাহলে কি বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে
মানুষ প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার কৌশল আবিষ্কার করতে পারেন নি? মানুষ আজ তার শিক্ষা
পদ্ধতির দ্বারা বিষয় ও বস্তু জগতের অনেক উন্নতি ঘটিয়ে উন্নত হয়েছে। যা কল্পনা করতে
পারতো না তাই আবিষ্কার করে উন্নতির চরম সীমায় গিয়ে উপস্থিত হয়েছে। এ সবকিছু
উন্নতির মূলে তার বুদ্ধি। এ বুদ্ধিটাও মানুষের দেহের ফসল। কিন্তু একটা কথা আছে যার
যত বুদ্ধি তার তত অশান্তি আর যার যত জ্ঞান তার তত প্রশান্তি। তাহলে অশান্তি সৃষ্টি
করার জন্য শিক্ষা নয় –শিক্ষা হল মানব মনে প্রশান্তি আনার জন্যে। এই তত্ত্বের উপর
ভিত্তি স্থাপন করে যে শিক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কার হবে সেটাই হবে মানব কল্যাণমুখী
শিক্ষা পদ্ধতি। আজ মনে রাখতে হবে বড় বড় হাওলাকাণ্ডে জড়িত, বোমা বিস্ফোরণে জড়িত
সকলেই কিন্তু এই সমাজের উচ্চ শিক্ষত মানুষ। তাহলে চিন্তা করে সবায় দেখুন এই
শিক্ষার মুল্য কোথায়? কোন জিনিষ আবিষ্কার করে মানুষের কল্যাণ করার সাথে সাথে সে
যাতে লোভী- দেশোদ্রোহী- অলস হয়ে না পড়ে—যেন সে তার দেহে রোগ- শোক-অশান্তিকে ডেকে
না আনে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। আর সেই সঙ্গে সর্বদা লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন
মানুষের মন শিক্ষার দ্বারা সর্বদা সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থাকে। যে যেকাজই করুক না
কেনো তা জেনো জনকল্যাণমুখী ও দেশের মঙ্গলের জন্যে হয়। ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।